বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়েছে আধ্যাত্মিক সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৪তম তিরোধান দিবস। এ উপলক্ষ্যে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়া লালন আখড়াবাড়িতে তিন দিনব্যাপী লালন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তিরোধান দিবসের এক সপ্তাহ আগ থেকেই হাজারো ভক্ত অনুসারীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পৌঁছেছেন সাঁইজির ধামে। আখড়াবাড়িতে আগত হাজারো ভক্ত-অনুসারীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ভাতৃত্বের বন্ধন।
তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে কালি নদীর পাড় ঘেঁষে লালন মাঠে শতাধিক অস্থায়ী থাকার জায়গা ও দোকান বসেছে। লালন শাহের মাজার প্রাঙ্গণ, মাঠ, কালি নদীর পাড়ঘেঁষে বসেছে দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্ত-অনুসারীদের খণ্ডখণ্ড দল। তারা গাইছেন লালন ফকিরের গান । দিনরাত গান গাওয়া ছাড়াও তারা লালন ফকিরের বাণী নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করছেন। অনেকে আবার লালনের মত ও পথের দীক্ষা নিচ্ছেন। আর এ মেলা দেখতে আসছেন হাজারো মানুষ। মাজার প্রাঙ্গণ পরিষ্কার করে বর্ণিল পরিবেশ সৃষ্টি করছেন লালন একাডেমি কর্তৃপক্ষ।
১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের মৃত্যুর পর থেকে তার স্মরণে লালন একাডেমি ও জেলা প্রশাসন এই স্মরণোৎসব চালিয়ে আসছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং লালন একাডেমির আয়োজনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোছা. শারমিন আখতারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার। অন্যান্যদের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় সচিব সাইদ মাহমুদ বেলাল হয়দার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ভাইস চ্যান্সেলর ড. নসরুল্লাহ, পুলিশ সুপার মো.মিজানুর রহমান, কুষ্টিয়া জেলা বি এন পির আহ্বায়ক মো. কুতুব উদ্দিন, সদস্য সচিব জাকির হোসেন সরকার, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে শুরু হবে লালন সঙ্গীত। চলবে রাতভর। যেখানে গাইবেন লালন একাডেমির শিল্পী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত বাউল শিল্পী ও ভক্তরা।
কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি শারমিন আখতার বলেন, বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে তিনদিন ব্যাপী লালন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিদিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে আলোচনা সভা শুরু হবে, আলোচনা শেষে শুরু হবে লালন সঙ্গীত। মাজার প্রাঙ্গণ ও তার আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।
আপনার মতামত লিখুন : :