ভিসা আবেদন:
প্রথম ধাপেই অনলাইনে পাকিস্তানের ভিসা আবেদন করতে হবে। সহজেই ঘরে বসে বা কাছের কোনো কম্পিউটার দোকান থেকে আবেদন করা যাবে। বর্তমানে ভিসা ফ্রি হওয়ায় কোন টাকা পয়সার প্রয়োজন নেই। আবেদন সম্পন্ন করার পর আপনি ই-ভিসা পেয়ে যাবেন।
টিকেট বুকিং:
ভিসা পাওয়ার পরেই টিকেট কনফার্ম করতে হবে। উত্তরাঞ্চল ঘুরতে চাইলে লাহোরকে বেছে নিন, কারণ ইসলামাবাদ বা করাচীর তুলনায় লাহোরের টিকেটের দাম তুলনামূলক কম। ঢাকা থেকে লাহোর রাউন্ড ট্রিপের টিকেটের দাম ৫৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ওঠানামা করতে পারে। তাই নিজের সুবিধা অনুযায়ী কম খরচের একটি এয়ারলাইন্সের টিকেট বুক করুন।
লাহোর থেকে ইসলামাবাদ:
লাহোর এয়ারপোর্টে পৌঁছে সিটি বাস স্টেশনে যেতে হবে। এখান থেকে কোনো একটি বাসে উঠে ৫ ঘণ্টার জার্নি শেষে পৌঁছাবেন ইসলামাবাদে। বাস ভাড়া প্রায় ১ হাজার টাকা।
ইসলামাবাদে থাকা:
ইসলামাবাদে বিভিন্ন ক্যাটাগরির হোটেল রয়েছে, আপনার বাজেট অনুযায়ী একটি হোটেল বেছে নিন। ইসলামাবাদকে বিশ্বের অন্যতম সুন্দরতম রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তাই এখানে কিছুদিন অবস্থান করে শহরটি ঘুরে দেখা দারুণ অভিজ্ঞতা হতে পারে।
কারেন্সি চেঞ্জিং:
লাহোরে পৌঁছানোর পর প্রথম কাজ হবে বাংলাদেশি টাকাকে রুপিতে কনভার্ট করা। ১০০ টাকা সাধারণত ১৯০ রুপি সমান, তবে কনভার্টের সময় কিছুটা কম পাওয়া যেতে পারে।
প্রাথমিক থাকা/হোটেল বুকিং:
পাকিস্তানে যাওয়ার আগে বা পৌঁছে প্রথমে ১-২ দিন লাহোর বা ইসলামাবাদে থাকতে হবে। আপনি চাইলে আগেই অনলাইনে হোটেল বুক করতে পারেন, তবে অনলাইন বুকিং করা হোটেলগুলো সাধারণত ব্যয়বহুল হয়। পরিবারের সাথে থাকলে আগে থেকে হোটেল বুকিং করে রাখুন।
মূল ট্যুর:
ইসলামাবাদ থেকে শুরু হবে আপনার মূল ট্যুর। খাইবার পাখতুনখা, গিলগিট-বাল্টিস্তান এবং আজাদ কাশ্মীরের যেকোনো অঞ্চল থেকে ঘুরতে পারবেন।
ট্যুরের পদ্ধতি:
১. স্বাধীনভাবে: নিজের ইচ্ছামতো ট্যুর করতে পারেন, তবে খরচ কম হবে।
২. ট্রাভেল এজেন্সি: একাধিক এজেন্সি আপনার জন্য গাইডসহ জিপ গাড়ির ব্যবস্থা করে দেবে। এতে খরচ কিছুটা বেশি হলেও সুবিধা বেশি।
খরচ বিবরণ:
পাকিস্তানে থাকা-খাওয়া ও অভ্যন্তরীণ যাতায়াত খরচ বাংলাদেশের মতো বা তার চেয়ে কম হতে পারে। তবে মূল খরচ হবে বিমান ভাড়া। অনুমান করা খরচ:
ভিসা: ফ্রি
ঢাকা-লাহোর বিমান ভাড়া: ৫৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা
লাহোর-ইসলামাবাদ বাস ভাড়া: প্রায় ২/৩ হাজার টাকা
১৫-২০ দিন অবস্থানের জন্য আনুমানিক খরচ: ১৫-২৫ হাজার টাকা (হোটেল, খাবার, যাতায়াত ও ঘোরাঘুরি)
ভ্রমণস্থল:
নর্থ পাকিস্তানে পর্যটন স্থানের অভাব নেই। কয়েকটি আকর্ষণীয় স্থানের মধ্যে:
১. সোয়াত: কামরাট ভ্যালি, কালাম ভ্যালি, মহোদন্ড লেক
২. হুনজা: হুনজা ভ্যালি, আতাবাদ লেক, বালতিত ফোর্ট
৩. স্কার্দু: সার্ফারাঙ্গা কোল্ড ডেজার্ট, কাচুরা লেক
৪. আজাদ কাশ্মীর: মুজাফফরাবাদ সিটি, নীলাম ভ্যালী
থাকা/হোটেল:
সব প্রধান পর্যটন অঞ্চলে আবাসিক হোটেল আছে, বিশেষ করে হুনজা এবং সোয়াতে হোটেলের পরিমাণ বেশি। স্কার্দুতে হোটেল কম। বড় হোটেলের লোকেশন অনলাইনেই পাওয়া যায়। আপনি চাইলে পোর্টেবল তাবু নিয়ে নিরিবিলি স্থানে থাকতে পারেন।
অতিরিক্ত অভিজ্ঞতা:
কারাকোরাম হাইওয়ে: পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সড়কগুলোর মধ্যে অন্যতম।
বাবুসর পাস: বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু সড়ক, যেখানে মেঘও আপনার নিচে দিয়ে বইবে।
সুইজারল্যান্ডের মতো জায়গা ঘোরার খরচের তুলনায় পাকিস্তান ট্যুর অনেক সস্তা।
ধন্যবাদ সবাইকে, আশাকরি এই নির্দেশনা আপনার ট্যুরকে আরো সহজ ও আনন্দময় করে তুলবে।
আপনার মতামত লিখুন : :