মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের বাঁশবাড়ীয়া পশ্চিম পাড়ায় অন্যের জায়গায় জরাজীর্ণ একটি ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন আমিরুল ও শিউলি নামের এক প্রতিবন্ধী দম্পতি। দীর্ঘদিন যাবত প্রতিবন্ধী এই দম্পতি মানবেতর জীবন যাপন করলেও তাদের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি আশ্রয়ণের ঘর। বার বার বিভিন্ন জনের কাছে ধর্ণা দিলেও কারো দয়া হয়নি এই ভূমিহীন অসহায় প্রতিবন্ধী মানুষ দুটির প্রতি। সুবিধা ভোগের উপযুক্ত হয়েও নিজস্ব মাথা গোজার ঠাঁই না পেয়ে চরম হতাশা আর আক্ষেপ নিয়ে দিন যাপন করছেন। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটলেও মৃত্যুর আগে তাদের মাথা গোঁজার একটু জায়গার স্বপ্ন পূরণ হবে কি না তা ভেবেই বেশি কষ্ট।
সোমবার (৮ জুলাই) সকালের দিকে বাঁশবাড়ীয়া গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় অবস্থিত শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী এই দম্পতির বাড়ি গিয়ে তাদের টানাপড়েনের জীবন যাপনের কথা জানা যায়। প্রতিবন্ধী আমিরুল তার প্রতিবন্ধী স্ত্রী কে নিয়ে অন্যের জমিতে দোচালা মরিচা পড়া টিনের জরাজীর্ণ এ ঝুপড়ি ঘরে দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করে আসছেন। ঘরে রয়েছে একটি নড়বড়ে শয়নের চৌকি, মাটির চুলা, হাড়ি পাতিল, থালাবাসন, মরচেধরা একটা বাক্স, একটা র্যাক, আর দড়িতে ঝুলানো কিছু কাপড়-চোপড় নিয়ে নিঃসন্তান এই দম্পতির ছোট সংসার।
প্রতিবেশীরা জানান, তারা খুবই কষ্টে আছে। তাদের না আছে কোনো ফসলি জমি না আছে বাড়ির জমি। আর পাঁচজন স্বাভাবিক মানুষের মত কাজ করার সক্ষমতাও নেই প্রতিবন্ধী আমিরুলের। নিঃসন্তান আমিরুল কে দেখার মতো কেউ নেই, বাবা, মা মারা গেছে অনেক আগে। প্রতিবন্ধী আমিরুল মাঠে অন্যের ভেরা চড়িয়ে কোন রকমে সংসার চালায়। তাদের জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া সরকারী কোন সহায়তা চোখে পড়েনি। তাদের মাথা গোঁজার জন্য একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দিলে শান্তিতে রাত পার করতে পারবে। সরকার এত এত সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, তারা কিছুই পায় না। কোনো দিন খায় আবার কোনো দিন না খেয়েও থাকে। তারা যে ঘরে বসবাস করে, সেই ঘরটাও বসবাসের উপযোগী নয়। তার উপর আবার নেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা।
এব্যাপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা কে ফোন করা হলে, তিনি বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবে বলে জানান। এবং প্রতিবন্ধী আমিরুল দম্পতির ঠিকানা পাঠানোর জন্য বলেন। তিনি বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন : :