যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই গ্রিনল্যান্ড দখলে নিতে চাওয়ার কথা বলে এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে গ্রিনল্যান্ড নিয়ে নেওয়ার হমকিও তিনি দিয়েছেন।
ট্রাম্পের সেই চোখরাঙানি উপেক্ষা করেই মঙ্গলবার ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ডে পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হয়েছে। এতে জয় পেয়েছে ডেনমার্ক থেকে স্বাধীনতার পথে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়ার পক্ষে থাকা মধ্য-ডান বিরোধীদল ডেমোক্রাট পার্টি।
নির্বাচনের প্রাথমিক আনুষ্ঠানিক ফলে দেখা গেছে, ২৯ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট পেয়ে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ডেমোক্রাটিট পার্টি। ২০২১ সালের ৯ দশমিক ১ শতাংশের তুলনায় এবার দলটি বেশি ভোট পেয়েছে।
ওদিকে, নালেরাক পার্টি ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এই দলটি দ্রুত ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পক্ষে।
অন্যদিকে, ২১ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়ে ক্ষমতাসীন ইনুইত আতাকাতিগিট পার্টি (আইএ) তৃতীয় অবস্থানে নেমে গেছে। আর দলটির বামপন্থি শরিক ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। আগের নির্বাচনের তুলনায় এবারের নির্বাচনে ভোটের এই সংখ্যা অনেক কম।
ভোটে শীর্ষ অবস্থানে উঠে আসা ডেমোক্রাটিট পার্টি নেতা জেনস-ফ্রেডরিক নেইলসন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “মানুষ পরিবর্তন চায়ৃআমরা আমাদের কল্যাণকর কাজে অর্থায়নের জন্য আরও ব্যবসা চাই। আমরা কালই স্বাধীনতা চাই না। আমরা একটি ভাল ভিত্তি চাই।”
ডেনমার্কের তত্ত্বাবধানে স্বায়ত্ত্বশাসন ভোগ করে আসছে গ্রিনল্যান্ড। সেখানে একটি স্বাধীন সরকার আছে। তবে পররাষ্ট্র, সামরিক এবং অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করে ডেনমার্ক।
দীর্ঘদিন ধরেই গ্রিনল্যান্ডের একাংশ মানুষ পূর্ণ স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড দখলে নিতে চাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর অঞ্চলটিতে স্বাধীনতার দাবি আরও জোারালো হয়েছে।
নির্বাচনে এরই প্রভাব পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া, ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ড দখলের ইচ্ছা প্রকাশের পর সেখানে এবারের নির্বাচন বিশ্বের নজর কেড়েছে। এবং যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন এই আর্কটিক অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করতে চাওয়ার কারণে দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক পোলার রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইনিশিয়েটিভ এর পরিচালক ডিওয়ানে রায়ান মেনেজেস বলেছেন, গ্রিনল্যান্ডের নির্বাচনে ডেমোক্রাটিট এবং নারেলাক পার্টির সাফল্য এই ইঙ্গিতই দিচ্ছে যে, গ্রিনল্যান্ডবাসীদের অনেকেই হয়ত স্বাধীনতা চাইছে।
দুই দলের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে এই যে, নারেলাকে প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে স্বাধীনতা। আর ডেমোক্র্যাটিটদের সর্বশেষ লক্ষ্য হচ্ছে স্বাধীনতা। এক্ষেত্রে কোন দৃষ্টিভঙ্গির জয় হবে সেটি মূলত নির্ভর করবে যদি ডেমোক্র্যাটিটরা একটি জোট সরকার গড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আর সেটি যদি হয় তাহলে কোন দলের সঙ্গে দলটি জোট গড়ছে তার ওপর বিষয়টি নির্ভর করবে- বলেন রায়ান মেনেজেস।
আপনার মতামত লিখুন : :