আফ্রিকার অন্যতম দূষিত শহর উগান্ডার রাজধানী কাম্পালা। এই অবস্থার পরিবর্তন চায় সরকার। তাই এক প্রকল্পের আওতায় কাম্পালায় কয়েকটি ইলেকট্রিক বাস চালু করা হয়েছে। ভবিষ্যতে গণপরিবহন হিসেবে ইলেকট্রিক বাস চালু করতে চায় উগান্ডা। সাম্প্রতিক সময়ে কাম্পালায় গাড়ির ধোঁয়া ও শব্দ শহরের বাসিন্দা ও পরিবেশের জন্য বোঝা হয়ে উঠেছে।
জাতিসংঘের হিসাব বলছে, আফ্রিকার অন্যতম দূষিত শহর কাম্পালা। সরকার এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে চায়। সেজন্য গ্যাসোলিন চালিত পরিবহনের জায়গায় ইলেকট্রিক বাহন চালুর চেষ্টা শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপ হিসেবে সরকারি গাড়ি নির্মাতা কিরা মোটর্সে বিনিয়োগ করেছে সরকার। মাকেরের বিশ্ববিদ্যালয় এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ইলেকট্রিক বাহন চার্জ দিতে যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটি আসছে জলবিদ্যুৎ থেকে। ইতিমধ্যে ২৭টি ইলেকট্রিক গাড়ি চলছে।
কিরা মোটর্সের কর্মকর্তা অ্যালান মুহুমুজা জানান, বেসরকারি কোম্পানিগুলো আমাদের সম্ভাব্য ক্রেতা, পর্যটন খাতও। তাই আমরা কাম্পালার ট্যাক্সি মালিক সমিতির সঙ্গে কাজ করছি। তাদের ট্যাক্সিতে ১৪টি আসন আছে। আমরা এর পরিবর্তে আরও বেশি আসনের ইলেকট্রিক গাড়ি চালু করতে চাই। সরকারের এতে সমর্থন আছে। কম আসনের বাহন থেকে বেশি আসনের বাহনের প্রতি সরকার আগ্রহী।
ইলেকট্রিক বাসগুলো বর্তমানে উগান্ডা এয়ারলাইন্স ও সিভিল এভিয়েশন অথোরিটির মতো সরকারি সংস্থাগুলোতে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে বিষয়টি লজ্জার, বলছেন বাসগুলোতে চড়া যাত্রীরা। যেমন প্যাট্রিক ওকেলো ওরিয়েম বলেন, বাসটা খুব আরামদায়ক। আপনি কোনো ভাইব্রেশন অনুভব করবেন না। কোনো ধোঁয়া নেই। এসিও দারুণ। নকশাটাও সুন্দর।
আমরা বলেছি, এই বাস যদি উগান্ডার উত্তরাঞ্চলে চালু করা যায়, তাহলে আমরা বলতে পারবো যে, আমরা উগান্ডায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে নিরাপদ গণপরিবহন ব্যবহার করছি। কাম্পালার অনেক ট্যাক্সি আর বাস বেশ পুরনো। এগুলোতে চলাচল নিরাপদ নয়, এগুলো পরিবেশ বান্ধবও নয়।
মাইকেল ওয়ানিয়ামা একটি সংস্থা গড়ে তুলেছেন, যেটি সড়কে নিরাপত্তা ও যাতায়াতের কারণে হওয়া স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে কাজ করে। তার নিয়মিত কাজের মধ্যে আছে একটি যান সড়কে চলাচলের উপযোগী কিনা তা দেখভাল করা এবং সেই তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেওয়া।
অটো সেফটি উগান্ডা প্রোগ্রামের কর্মকর্তা মাইকেল ওয়ানিয়ামা বলেন, এসব তথ্য পাওয়ার পর সরকার সেগুলো নীতি ও নিয়ম-কানুন তৈরিতে ব্যবহার করতে পারে। মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে ইলেকট্রিক বাহন কিনতে আগ্রহী করতে সরকার হয়তো প্রণোদনার ব্যবস্থা চালু করতে পারে। আরেকটি বিষয়, প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করা সংস্থা হিসেবে আমরা কিছু যানকে ইলেকট্রিক বাহনে রূপান্তরের কাজ করছি।
নতুন গাড়ি কেনার চেয়ে এটি সাশ্রয়ী বিকল্প হতে পারে। একটি ইলেকট্রিক ট্যাক্সির দাম ৩৫ হাজার ইউরো হতে পারে, যেটি অনেক ট্যাক্সি চালকের পক্ষেই কেনা সম্ভব নয়। ইলেকট্রিক গাড়ি আমদানিতে সরকার এখনও কর নিয়ে থাকে, তাই অনেক চালকের পক্ষে এগুলো কেনা সম্ভব নয়। ই-মোবিলিটি পুরোপুরি অর্জন করতে উগান্ডায় আরও অ্যাক্টিভিস্ট ও বিনিয়োগ প্রয়োজন। তবে যাত্রা শুরু হয়েছে- যদিও সামনে অনেক পথ।
আপনার মতামত লিখুন : :