প্রাণঘাতী সংঘাতে লিপ্ত হাইতির অপরাধী দলগুলোর সঙ্গে লড়াই করতে দেশটির রাজধানীতে উপস্থিত হয়েছে মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়াতেমালা ও এল সালভাদরের নিরাপত্তা বাহিনীর একটি দল। দেশটিতে নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার করতে নিয়োজিত জাতিসংঘ সমর্থিত মিশনের শক্তি বাড়াতে শুক্রবার তারা দেশটিতে গেছেন।
জাতিসংঘ মিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দলটিতে গুয়াতেমালার ৭৫ জন ও এল সালভাদরের আটজন সেনা রয়েছেন।
হাইতির অন্তর্বতীকালীন প্রেসিডেন্সিয়াল পরিষদের প্রধান লিসলি ভলতেয়ার, প্রধানমন্ত্রী অ্যালিক্স দিদিয়ের ফি-সেমা ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেনিস হ্যানকিন্স রাজধানী পর্তোপ্রাঁসের বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়ে ওই সেনাদের স্বাগত জানান বলে সামাজিক মাধ্যমে করা এক পোস্টে জানিয়েছে দেশটির আন্তর্বতী সরকার।
দেশটির সরকার বলেছে, বন্দুক ও গুন্ডাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বহুজাতিক বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করতে এসেছেন তারা।
রয়টার্স জানিয়েছে, জাতিসংঘকে পাঠানো একটি চিঠিতে গুয়াতেমালার প্রেসিডেন্ট বের্নাদো আরেভালো হাইতির মিশনে উপকরণসহ সেনা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর তিন মাস পর সেপ্টেম্বরে তিনি দেড়শ জন মিলিটারি পুলিশ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এল সালভাদর অগাস্টে ৭৮ জন সেনা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সঙ্গে তিনটি হেলিকপ্টারসহ।
রয়টার্স লিখেছে, মহাসড়কগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অপরাধীদলগুলোর নিয়ন্ত্রিত চেকপয়েন্ট ও পাহাড়ি ভূখণ্ডের কারণে এসব হেলিকপ্টার হাইতির নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলে বলেছেন, তিনি হাইতির সমস্যা ঠিক করে ফেলতে পারবেন আর দেশটির অপরাধী দলগুলো অবশ্যই ‘বিলুপ্ত’ হয়ে যাবে। বুকেলে তার নিজ দেশে সংগঠিত অপরাধী দলগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালিয়ে সেগুলোকে দমন করতে সক্ষম হয়েছেন। এতে নিজ দেশে ব্যাপক জনপ্রিয় প্রেসিডেন্টে পরিণত হয়েছেন তিনি।
হাইতিতে জাতিসংঘের এই মিশনের নেতৃত্বে আছেন কেনিয়া। দেশটি হাইতিতে ১০০০ পুলিশ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও গত বছরের মাঝামাঝি প্রায় ৪০০ জনের মতো পাঠিয়েছে। এই পুলিশরা হাইতিতে আগে থেকেই থাকা ২৪ জ্যামাইকান সেনা ও বেলিজের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সঙ্গে যোগ দেন। কিন্তু এই মিশন অপরাধী দলগুলোর নতুন ভূখণ্ড দখল করা এবং বেশ কয়েকটি নির্বিচার হত্যাকাণ্ড রোধ করতে ব্যর্থ হয়। এরপর ২০২৪ এর ডিসেম্বরে হাইতিজুড়ে সহিংসতা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়, ফলে হাজার হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
হাইতির পুলিশ গত কয়েক বছরে হাজার হাজার পুলিশ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেছে। বিশ্বের প্রায় ১০টি দেশ একসঙ্গে হাইতিতে ৩১০০ জনেরও বেশি সেনা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু এ পর্যন্ত তাদের মধ্যে শুধু কয়েকটি দেশ সেনা মোতায়েন করেছে।
আপনার মতামত লিখুন : :