• ঢাকা
  • বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১
Bancharampur Barta
Bongosoft Ltd.
মাসে লাখ টাকা মাসোয়ারা নেন টিএস!

বাঞ্ছারামপুরে সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের দাবি


বাঞ্ছারামপুর বার্তা | মনিরুজ্জামান পামেন মার্চ ৯, ২০২৫, ১১:০৮ পিএম বাঞ্ছারামপুরে সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের দাবি

দীর্ঘদিন যাবত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। সরকারি নিয়মনীতি, আইন কানুন তোয়াক্কা না করে বছরের পর বছর অবৈধভাবে স্বাস্থ্যসেবার নামে বাণিজ্য করে যাচ্ছে তথাকথিত সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
পরিবেশ সনদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সনদ, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, আয়কর সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্সসহ বেশকিছু শর্ত পূরণের মাধ্যমে একটি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ লাইসেন্স মেলে। কিন্তু এসবের অনেক কিছুই নেই সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের। তাছাড়া সরকারি আইন অনুযায়ী সদর হাসপাতালের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে বেসরকারি কোন হাসপাতাল, ক্লিনিক কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার দেয়ার অনুমতি নেই। অথচ বাঞ্ছারামপুর সদর হাসপাতালের মাত্র ১০ গজের মধ্যেই সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি বছরের পর বছর অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারি নানাবিধ শর্ত পূরণ না করেই সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সরকারি বিধিমালা কিংবা নানা শর্তে লাইসেন্স দেওয়ার পর সরকারিভাবে তদারকি করা হয়। পরে অনুমোদিত পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু করতে হয়। কিন্তু সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে দক্ষ প্যাথলজিস্ট, চিকিৎসক ও ডিপ্লোমা নার্স থাকা বাধ্যতামূলক হলেও অধিংকাংশ শর্ত পালন করা হচ্ছে না। মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স, অপর্যাপ্ত জনবল, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও নানা অনিয়মের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি বহাল তবিয়তে আছে। এতে করে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, বাঞ্ছারামপুর সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে কমিশন পাচ্ছে দালাল চক্র। ফলে উন্নত চিকিৎসাসেবার নামে মানুষ ঠকানোর ব্যবসায় পরিণত হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এতে প্রতিনিয়ত অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন রোগীরা। বৈধ কোন কাগজপত্র ও পর্যাপ্ত জনবল না থাকা সত্ত্বেও কিভাবে সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে সেই প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মনে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি জানান, বাঞ্ছারামপুর সদর হাসপাতাল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন অফিসের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ নিবন্ধনহীন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাছাড়া জেলা সির্ভিল সার্জনদের নের্তৃত্বে তদারকির নির্দেশনাও দেয়া হয়েছিল। অথচ বাঞ্ছারামপুরে অবৈধ ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর ব্যাপারে কার্যত কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বড় ধরনের অপচিকিৎসা কিংবা ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃতে্যুর আগেই সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যাপারে তদন্তের দাবিও করেছেন এখানকার সচেতন মহল।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত জনৈক ব্যক্তি জানান, পত্র পত্রিকায় লিখে কোন লাভ হবে না। গত ৭-৮ বছর যাবত বাঞ্ছারামপুর সদর হাসপাতালের টিএসকে প্রতিমাসে ১ লাখ টাকা করে মাসোয়ারা দেয়া হয়। জেলা সিভিল সার্জন অফিসেও ৫০ হাজার টাকা পাঠানো হয়।
২০২৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর নানাবিধ অনিয়মের কারণে বাঞ্ছারামপুর ল্যাবএইড ডিজিটাল ডায়গনস্টিক সেন্টারকে ১ লাখ টাকা, সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৩০ হাজার টাকা, মডার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ১০ হাজার টাকা এবং আল মদিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নজরুল ইসলাম জরিমানার পাশাপাশি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। তারপরও সরকারি নিয়মনীতির বাইরে গিয়ে অবৈধভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। 
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাঞ্ছারামপুরবাসী।

Side banner