ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে ল্যাবএইড ডিজিটাল ডায়গনস্টিক সেন্টার সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো অনুমোদন ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। অথচ, স্বাস্থ্য সেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত পরিচালনায় সরকারি অনুমোদন থাকা বাধ্যতামূলক।
পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি:
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ক্লিনিকটি চিকিৎসা বর্জ্য যথাযথভাবে নিষ্পত্তি না করে যেখানে সেখানে ফেলছে, যা আশপাশের পরিবেশকে মারাত্মকভাবে দূষিত করছে। এতে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম কক্ষের জন্য নির্ধারিত সরকারি মানদণ্ড অনুসারে নির্দিষ্ট পরিমাণ আয়তন থাকা বাধ্যতামূলক, কিন্তু এই ডায়গনস্টিক সেন্টারে তা মানা হয়নি। ব্যবহৃত ইকুইপমেন্ট অত্যন্ত পুরোনো ও নিম্নমানের, যার ফলে রোগীদের সঠিক রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে রোগীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়ছেন।
এছাড়া, অদক্ষ ও অনভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান দ্বারা রিপোর্ট প্রস্তুত করা হচ্ছে, ফলে রোগীরা সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না। এটি রোগীদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা। তাছাড়া, পৌরসভার বিল্ডিং কোড লঙ্ঘন করে সরকারি রাস্তার পাশে ক্লিনিকটি পরিচালিত হচ্ছে, যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
অভিযান ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা:
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর বাঞ্ছারামপুর উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে দেখা যায়, ডায়গনস্টিক সেন্টারটির কোনো অনুমোদন নেই এবং এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রামের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। এসব অনিয়মের কারণে প্রশাসন ১ লাখ টাকা জরিমানা করে এবং ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেয়। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই আবারও বেআইনিভাবে ক্লিনিকটি চালু করা হয় প্রশাসনের নাকের ডগায়! এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
এলাকাবাসীর ক্ষোভ ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান:
এলাকাবাসীর দাবি, নিয়মবহির্ভূতভাবে পরিচালিত ডায়গনস্টিক সেন্টারটি দ্রুত বন্ধ করা হোক। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারে। স্বাস্থ্যসেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি খাতের এমন চরম অব্যবস্থাপনা ও আইনের শিথিল প্রয়োগ প্রশাসনের ব্যর্থতাকে স্পষ্ট করে। তাই দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা জরুরি।
আপনার মতামত লিখুন : :