• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারি, ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১
Bancharampur Barta
Bongosoft Ltd.
৩ বছরে রোগী উঠেছে মাত্র একজন!

বাঞ্ছারামপুর সরকারী হাসপাতালে ভারতীয় এম্বুলেন্স 


বাঞ্ছারামপুর বার্তা | ফয়সল আহমেদ খান জানুয়ারি ৮, ২০২৫, ০২:১৪ পিএম বাঞ্ছারামপুর সরকারী হাসপাতালে ভারতীয় এম্বুলেন্স 

কাজে আসছে না ভারতের উপহার দেওয়া এনআইসিইউ সেবা সম্বলিত অ্যাম্বুলেন্সটি। ২০২২ সালের ৭ মার্চ বাঞ্ছারামপুর সরকারি হাসপাতালকে বিশাল অনুষ্ঠান আয়োজন করে এম্বুলেন্সটি দেয়া হয়েছিল।
লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে তৎকালীন এমপি ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম (বর্তমানে কারাগারে), ও ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী কে খুশি করতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে এম্বুলেন্সেরটির চাবি হস্তান্তর করা হয়, যা এখন গ্যারেজ বন্দী।
এম্বুলেন্সটি না চালানোর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্য অ্যাম্বুলেন্সের তুলনায় এগুলোর ইঞ্জিন ভারী ও বডি হালকা হওয়ায় চালকরা সড়কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। ফলে গন্তব্যে যেতে সময় লাগে বেশি। এছাড়া এতে এনআইসিইউর নামে যে যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে তা নামমাত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২১ সালে করোনা মহামারির পর উপহার হিসেবে এনআইসিইউ সম্বলিত ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্স বাংলাদেশ সরকারকে দেয় ভারত। এরপরের বছর ২০২২ সালের ৭ মার্চ এক অনুষ্ঠানে ভারতের হাইকমিশনার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরও একটি অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেন। এ নিয়ে জেলায় চারটি অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেয়া হয়।
এরপর নানান সমস্যার কারণে এগুলো ঢাকায় রোগী নিয়ে যেতে পেরেছে মাত্র একদিন। এই অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঢাকায় রোগী নিয়ে যেতে সময় লাগে ৭ ঘণ্টা, যেখানে সাধারণ একটি অ্যাম্বুলেন্সে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর  থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে সময় লাগে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা। এ অবস্থায় রোগীর স্বজনরা পড়ে যান অস্বস্তিতে।
৫০ শয্যাবিশিষ্ট বাঞ্ছারামপুর সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক মনির হোসেন বলেন, ভারতীয় উপহারের অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে প্রথম দিন রোগী নিয়ে যাওয়ার সময় দেখা দেয় বিপত্তি। অ্যাম্বুলেন্সের গতি হবে দ্রুত, কিন্তু এই অ্যাম্বুলেন্সের যে গতি উঠছিল তা দেখে রোগীর স্বজনরা ক্ষেপে যান। ৩ ঘণ্টার পথ যেতে লেগে যাচ্ছিল ৭-৮ ঘণ্টা। এ অবস্থায় তো রোগী মারা যাবে। তাই মাঝ রাস্তায় রোগী নিয়ে নেমে অন্য অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে চলে যান তারা। এরপর থেকে এটি নিয়ে আর ঢাকায় যাওয়া হয়নি।
সরকারি হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা: সৈয়দ অলি মোহাম্মদ রাসেল  জানান, এর গতি উঠে না। নানান সমস্যার কারণে গত তিন বছর ধরে গ্যারেজ পড়ে আছে। অ্যাম্বুলেন্সটির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পিকআপের বডিতে অ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে দিয়েছে। হাইওয়েতে এটি অনেক সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় এবং চলন্ত অবস্থায় বন্ধ হয়ে যায়। রোগীকে তুলে দিতে হয় অন্য অ্যাম্বুলেন্সে। এটি নামমাত্র আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স। এখন গ্যারেজে পড়ে আছে।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রঞ্জন বর্মণ বলেন, অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার পরই আমরা অফিসিয়ালি জানিয়ে দিয়েছি এসব চলার মতো রাস্তা আমাদের নেই। এরপর গত তিন বছরে ঢাকায় রোগী নিয়ে যেতে পেরেছে মাত্র একদিন।

Side banner