• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
Bancharampur Barta
Bongosoft Ltd.

গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের বেহাল অবস্থা


বাঞ্ছারামপুর বার্তা | শাহিন নুরী অক্টোবর ২২, ২০২৪, ০১:৪২ পিএম গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের বেহাল অবস্থা

গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা পায়ের নিচে, তত্ত্বাবধায়কের দুটি হাত থাকলেও কোন কিছু জানতে চাইলে দেখান অজুহাত। ফ্লোরে চলছে রোগীর চিকিৎসা, রোগ মুক্ত হতে এসে ফিরে যান নানান জীবাণু বাহিত রোগ নিয়ে।
গাইবান্ধার জেনারেল সদর হাসপাতাল ১৯৮৪ সালে ৫০ শয্যা নিয়ে হাসপাতালটির যাত্রা শুরু হলেও কয়েক দফায় তা বৃদ্ধি পেয়ে উন্নতি করা হয়েছে ২৫০ শয্যায়। গাইবান্ধা জেলাটি সাতটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এই জেলায় বর্তমানে ২৬ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এই জেলা সদর হাসপাতালে প্রায়ই দেখা মেলে পায়ের নিচে ফ্লোরে রোগীর চিকিৎসা, রোগ মুক্ত হতে এসে ফিরে যান নানান জীবাণু বাহিত রোগ নিয়ে। 
বিভিন্ন সময়ে হাসপাতালটির বিষয়ে সুচিকিৎসা, দুর্গন্ধ মুক্ত, সিন্ডিকেট মুক্ত, হাসপাতাল গড়তে  বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সুধী সমাজ আন্দোলন ও মানববন্ধন করে আসছে। দুর্নীতির কড়াল গ্রাসে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি সেক্টর যখন আক্রান্ত হয়েছে সেখান থেকে বাদ যায়নি গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালেও চলেছে দুর্নীতি, ঔষধ নিয়ে সিন্ডিকেট, খাবার নিয়ে সিন্ডিকেট, বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জামাদি থাকা সত্ত্বেও দালাল চক্রের মাধ্যমে রোগীদেরকে বিভিন্ন ভাবে বুঝিয়ে ভুলিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য জোর করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠে। এমনকি সদর হাসপাতালে চিকিৎসারত ডাক্তাররা চিকিৎসার সময়কালীন সময়ে ডায়গনস্টিক ও ক্লিনিক থেকে ফোন পেলেই সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বাদ দিয়েই ছুটে চলে যায় অতিরিক্ত টাকা ইনকাম করার জন্য ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিকগুলোতে। 
রোগীদের জিজ্ঞেস করলে বলে ডাক্তার নাই, আবার ডাক্তারের দালাল চক্ররা বলে স্যার একটু বাহিরে গিয়েছে। রোগীর স্বজনরা জোরে সোরে করে বললে প্রস্রাব অথবা নাস্তা করতে গেছে এসব বলে দালারা। প্রতিনিয়ত অভিযোগ ওঠে মুমূর্ষ রুগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসলে জরুরী বিভাগ থেকেই দ্রুত রেফার্ড করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এতে করে গাইবান্ধার অনেক তাজা প্রাণ সাময়িক চিকিৎসা না পেয়ে দ্রুত ভয়ে তটস্থ হয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে রংপুর মেডিকেল  কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে এমন রেকর্ড অনেক ঘটছে। কখনো চিকিৎসা সেবার নামে জরুরি বিভাগেও ডাক্তাররা তাদের স্পেশাল কক্ষে রেস্ট করলে ইন্টারনি চিকিৎসকরা চিকিৎসা সেবা দেয় জরুরি বিভাগে। এমন অভিযোগ ও সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করতে গেলে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অনেক রোগী বলেন, আমাদের ছবি তুইলা কি হইব, আমাদের বক্তব্য নিয়ে কি হইব, অনেক তো সদর হাসপাতাল নিয়ে নিউজ হইছে কোন পরিবর্তন কি হইছে। তখন স্তব্ধ হয়ে নিরবে নিভৃতে ফিরে আসতে হয়। 
অনেকে সদর হাসপাতালকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন আউটসোর্সিং নিয়োগ সহ খাদ্যের সিন্ডিকেট করে আঙ্গুল ফুলে হয়ে গেছেন কলাগাছ। যা দৃশ্যমান থাকলেও কথা বলার সাহস হয়ে ওঠে নাই কারো। 
গাইবান্ধা জেলা সহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর উত্তরবঙ্গে তেমন কোন উন্নতির ছোঁয়ায় লাগেনি যদিও বা লাগতে শুরু করেছে সেখানেও চলেছে দুর্নীতি, অনাচার ও ব্যভিচার। কবে মিলবে এর মুক্তি কেউ বলতে পারে না। উত্তরবঙ্গ প্রসঙ্গ বাদেই দিলাম কবে মিলবে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা। যেখানে থাকবে সকল বিষয়ের ডাক্তার। থাকবে আইসিইউ থাকবে সুন্দর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন একটি হাসপাতাল। থাকবে না কোন সিন্ডিকেট, থাকবে না কোন অবিচার চলবে না পায়ের নিচে ফ্লোরে কোন চিকিৎসা। দুর্ভোগ বা ভোগান্তিতে পড়তে হবে না রোগীদের। অনিরাপত্তা অনিয়ম অব্যবস্থাপনায় চলবে না হাসপাতালে। 
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সভ্যতায় মানুষের প্রকৃত চিকিৎসা সেবা পাওয়ার অধিকার রাষ্ট্রীয়ভাবে আছে। কিন্তু কবে মিলবে এই রাষ্ট্রীয়ভাবে সকল মানুষের তথা গাইবান্ধা জেলার প্রত্যেকটি মানুষের সুস্পষ্ট চিকিৎসা সেবা যেখানে ঝরবেনা কোন তাজা প্রাণ। আইসিউর অভাবে অনিয়মের কারণে ঘটবে না কোন তাজা প্রাণের মৃত্যু। 

Side banner