মেধা থাকলেই গ্রামের স্কুল কলেজ থেকেও সাফল্যে অর্জন করা সম্ভব। তা দেখিয়ে দিয়েছেন রাউজানের ৫ শিক্ষার্থী। এই ৫ শিক্ষার্থী গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি তে জিপিএ ৫ অর্জন করেছিল। এইচএসসিতেও তারা গ্রামের কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্য ধরে রেখেছে।
জানা যায়, ২০২২ সালের এসএসসিতে তুনাজ্জিনা সালমিন রওশীন, জান্নাতুল মাওয়া রিদি, ফাতেমাতুজ জুহরা উত্তরসর্তা দরগাহ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় শিক্ষা, মানবিক, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছেন। অন্যদিকে ওমর শরফুদ্দিন রামীম ও সাবরিনা আকতার আলিয়া এয়াছিন্নগর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উর্ত্তীর্ণ হন। এরা ৫ জনই উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের ২টি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫ অর্জন করে ও শহরের কোনো নামি দামি কলেজে ভর্তি না হয়ে এইচএসসিতে ভর্তি হন একই ইউনিয়নে অবস্থিত হযরত এয়াছিন শাহ পাবলিক কলেজের বিভিন্ন বিভাগে।
তারা ৫ জন শিক্ষকদের সহযোগিতায় কঠোর পরিশ্রম করে ও শিক্ষকদের প্রতি শতভাগ আস্থা রেখে পাঠদান গ্রহণ করে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। এই ৫ জনই এবারের উচ্চ মাধ্যমিক ফলাফলে জিপিএ ৫ পেয়ে কলেজের সুনাম, শিক্ষকদের সুনাম এবং পিতা মাতার সুনাম অক্ষুন্ন রেখেছেন।
কলেজের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আবদুল মন্নান জানান, ১৯৯৫ সালে এ কলেজ প্রতিষ্টা হওয়ার পর ৯৬ সাল থেকে আমি কলেজে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত। গত ২ বছর যাবৎ অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দেখছি গ্রামে অনেক অনেক মেধাবি ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। তারা যদি মন দিয়ে পড়া লেখা করে চট্টগ্রাম কলেজ, মহসিন কলেজ লাগেনা। এখান থেকেও ইন্টার পাস করে অনেক উপর লেভেলের শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। গ্রামের কলেজ থেকে পাস করে মেডিকেল, বুয়েট, চুয়েট ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া করছে এমন অনেক নজির রয়েছে। তিনি অভিভাবকদের সচেতনতার উপর জোর দেন।
এদিকে জিপিএ-৫ পাওয়া ওমর শরফুদ্দিন রামীমের বাবা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক (স্থায়ি বাড়ী কুমিল্লা) মোঃ ফরিদ উদ্দিন জানান, আমার ছেলের ভাল ফলাফলে শিক্ষকদের আন্তরিক পাঠদান ও ছেলের আগ্রহ। কলেজে লেখাপড়ার মান এতই ভালছিল যে, ছেলে প্রতিদিন কলেজ থেকে এসে আমাকে বলতো। স্যাররা শিক্ষার্থীদের ডেকে ডেকে ক্লাসে নিয়ে গিয়ে পাঠদান দেন। যারা স্যারদের কথা শুনেছে তারা ভাল ফলাফল অর্জন ও পাস করেছে। আর যারা ফাঁকি দিয়েছে তারা ফেল করেছে। এখানে ভাল ও খারাপ দুটি থাকবে। এতে আপসোস নেই।
কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. বিকিরন বড়ুয়া বলেন, শিক্ষাবিদ এম আবদুল ওহ্হাব বিএ বিএড মাইজভান্ডারী (রহঃ) কলেজটি প্রতিষ্টা করেছেন, একমাত্র অজপাড়া গাঁয়ের ঝরে যাওয়া গরিব অসহায় সহ সকল স্তরের শিক্ষার্থীরা জ্ঞানের আলো গ্রহণ করার লক্ষ্যে। আজ সেটি বাস্তবে প্রতিফলন ঘটেছে।
আপনার মতামত লিখুন : :