• ঢাকা
  • বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২
Bancharampur Barta
Bongosoft Ltd.

নায়েব কামালের কাছে জিম্মি সোনারামপুরের সেবাপ্রার্থীরা 


বাঞ্ছারামপুর বার্তা | স্টাফ রিপোর্টার এপ্রিল ১৪, ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম নায়েব কামালের কাছে জিম্মি সোনারামপুরের সেবাপ্রার্থীরা 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের উপ সহকারি ভূমি কর্মকর্তা কামাল হোসেন। তার বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য থেকে শুরু করে সেবা প্রার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার, অফিসে বসে ধূমপান করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। খারিজ করতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা, পর্চা নিতে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন তিনি। তার কাছ থেকে টাকা ছাড়া কোন সেবা মিলে না। পুরো অফিসকেই তিনি ঘুষ বাণিজ্যের আখড়ায় পরিণত করেছেন।
মো. কামাল হোসেন সোনারামপুর ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা। নিজ ইউনিয়নে চাকরিবিধি মোতাবেক চাকরি করার সুযোগ না থাকলেও সে প্রভাব খাটিয়ে এবং কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই কর্মরত রয়েছেন। এতে করে পারিবারিক ঝামেলা ও আত্মীয় স্বজনদের শত্রুদের সাথে নানা রকম দুর্ব্যবহার করছেন। অনেকে দিনের পর দিন খারিজ করতে ঘুরছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক জায়গায় ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে তাকে শাস্তিমূলক কয়েকবার বদলী করা হয়েছিল। এই ঘুষ বাণিজ্য করে সে নিজ গ্রাম চর মরিচাকান্দিতে তৈরি করেছেন আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ি। নরসিংদীতে রয়েছে তার জমি। ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা করান দামি কলেজে, খরচ করেন মাসে কয়েক লাখ টাকা। নিজেকে কখনও আওয়ামী লীগের কর্মী আবার কখনও বা বিএনপির কর্মী দাবি করেন।
বিগত সময়ে নায়েব কামাল এলাকায় ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে উপজেলা সদর ও বিষ্ণুরামপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে চাকরি করেছেন, আবার প্রভাব খাটিয়ে তিনি নিজ ইউনিয়নে বদলি হয়ে এসেছেন। শুধু ঘুষ বাণিজ্য নয়, সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে অনেককে দোকান করার সুযোগ করে দিয়েছেন। এতে করে স্থানীয় অনেক ব্যক্তির কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। শুধু তাই নয়, সোনারামপুর বাজারে অবৈধ দখলদারদের সাথে আঁতাত করে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ১০ লাখ টাকা। 
বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় নায়েব কামাল একজন ঘুষখোর ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সেবা নিতে আসা প্রার্থীরা। অফিসে বসে প্রকাশ্যে ধূমপান করেন তিনি। ধূমপানের ছবি বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। মরিচাকান্দির চরের অবৈধ বালু উত্তোলন করছে নরসিংদীর একটি প্রভাবশালী মহল। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিদিন সেখান থেকে তিনি ১০ হাজার করে টাকা নেন এবং বিভিন্ন সময়ে অভিযানের আগাম তথ্য দিয়ে দেন তাদের। এতে করে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারি কমিশনার (ভূমি) সহ সরকারি কর্মকর্তাদের প্রায় সময়ই অভিযানে গিয়ে ফিরে আসতে হয়। ফলে আসল উদ্দেশ্য ব্যহত হয়। 
দুলারামপুর গ্রামের আমির হোসেন জানান, আমি জমি খারিজ করতে গিয়েছিলাম, নায়েব কামাল সাব আমার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেছে। পরে স্থানীয় এক মোক্তারের সহযোগিতা আমি ১২ হাজার টাকা দিয়ে খারিজটা করেছি। তিনি লোকজনের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। 
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দলিল লেখক জানান, নায়েব কামাল যোগদানের পর থেকে হয়রানির চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে এই এলাকার সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে যারা খারিজ করতে আসে ও পর্চার জন্য আসে তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। খারিজের নানা সমস্যার কথা বলে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন এবং অনেকের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। তিনি নিজেকে এসিল্যাণ্ড ও ইউএনওর বিশ্বস্ত লোক দাবি করে বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কোন কাজ হবে না, টাকা দিয়ে আমি এখানে বদলী হয়ে এসেছি। তাছাড়া টাকা ভাগ উপরের সবাই পায়। 

Side banner