• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১
Bancharampur Barta
Bongosoft Ltd.
বাল্য বিবাহ পড়ানো সহ নানাবিধ অভিযোগ

বাঞ্ছারামপুরে অগাধ সম্পদের মালিক বিয়ের কাজী


বাঞ্ছারামপুর বার্তা | সালমা আহমেদ ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪, ১০:৪৪ পিএম বাঞ্ছারামপুরে অগাধ সম্পদের মালিক বিয়ের কাজী

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের মো. ফরিদুজ্জামান এবং সোনারামপুর ইউনিয়নের কাজী হেলাল উদ্দিনের নামে নিকাহ রেজিস্ট্রারের (কাজি) বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহ নিবন্ধনসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবী করেছেন এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশী বাল্য বিবাহের স্বীকার হন উল্লেখিত দুটি ইউনিয়নের মেয়েরা।
অভিযোগ রয়েছে, বাল্যবিবাহের প্রায় প্রতিটি বিয়েতে সরকার নির্ধারিত মূল্যের ২/৩ গুণ ফি আদায়, কাবিন নামা বাংলা থেকে ইংরেজি ভার্সন করায় গলা কাটা ফি আদায়, মেয়ে অপ্রাপ্ত হলে উপরের মহলকে খুশী করার কথা বলে আরো বাড়তি ফী আদায় করেন।
নিকাহ রেজিস্ট্রার বই কয়েকটি জায়গায় বর ও কনের জন্মের তারিখ লিপিবদ্ধ করা হয় না। বইয়ের প্রায় ৬০ ভাগ জায়গায় বিবাহ পড়ানো ব্যক্তি, কনে ও কাজির সই থাকেনা। কিছু জায়গায় সাক্ষীদের নাম থাকে কিন্তু সই নেই। আবার কিছু জায়গায় বর ও কনের সই ছাড়া সব কলাম ফাঁকা রাখা হয়। বেআইনি প্রক্রিয়ায় অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের জন্য এসব অনিয়ম করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে মঙ্গলবার দুপুরে কয়েকজন স্থানীয় সংবাদকর্মী উজানচরের কাজী ফরিদুজ্জামানের বুধাইরকান্দির বাসভবনে দেখা করতে গেলে দেখা যায় কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আলিশান বাড়িতে তিনি রং করাচ্ছেন। জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী হোমনা উপজেলায় তিনি সম্প্রতি ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০ শতক মূল্যবান বাড়ি করার উপযোগী জায়গা কিনেছেন। এ ছাড়া রয়েছে বিপুল পরিমাণ ব্যাংক ব্যালেন্স।
অভিযোগে জানা গেছে, ফরিদুজ্জামান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা। সদ্য  জামিনে কারামুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জনি চেয়ারম্যানের সাথে ছিলো তার সুসম্পর্ক। এটিকে কাজে লাগিয়ে তাঁর পিতাকে ভূয়া মুক্তিযুদ্ধার সার্টিফিকেট তুলে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দেন। যদিও কাজী সাহেব তা সাংবাদিকদের কাছে অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, আমার এই ডুবাই ডিজাইনের বিল্ডিং এর ছবি তুলতে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা আসেন।
কিভাবে এতো টাকা বিত্ত বৈভবের মালিক হলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে সগৌরবে ফরিদুজ্জামান বলেন, আমি কাজীগিরী ছাড়াও শিক্ষক, বিকাশ ব্যবসা, অন্যান্য বিভিন্ন (!!) ব্যবসা করি।
বাল্য বিবাহ তিনি রেজিষ্ট্রেশন করেন না বলে দাবী করে বলেন, বাল্য বিবাহ ভাল না। সমাজের জন্য ক্ষতিকর।
সোনারামপুর ইউনিয়নের কাজীকে বলা হয় বাল্য বিবাহের “সেরা কারিগর”। জানা গেছে, কাজী হেলাল উদ্দিন নিজেও বাল্য বিবাহ করেছিলেন। যা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিলো।
অভিযোগ রয়েছে, সোনারামপুর ইউনিয়নের ৫০% বিয়েই বাল্য বিবাহের আওতায়। ফলে, স্কুলে ঝড়ে পড়ার হার ঐ ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশী। জানা গেছে, তিনিও বর্তমানে ছাত্রদল নেতা নয়ন হত্যার মামলার পলাতক আসামী শাহিন চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে বাল্য বিয়ে পড়িয়ে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন। তার সাথে কথা বলতে গেলে, তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন।
এই দুই কাজীর বাল্যবিবাহ অভিযোগ  নিয়ে কথা বলা ও কাজীদের নিয়োগ ও তদারকির একমাত্র সরকারি কর্তৃপক্ষ হলেন জেলা সাবরেজিস্ট্রার। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সাবরেজিস্টার খালিদ বিন আসাদ আজ মুঠোফোনে অভিযুক্তদের বিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি জানান, আমি সম্প্রতি জেলায় যোগদান করেছি। এদের বিষয়টা জানলাম। অবিলম্বে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Side banner