মেহেরপুরে কলাই চাষে ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে আশা করছেন কৃষকরা। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার অধিকাংশ এলাকায় কলাইয়ের চাষ চোখে পড়ার মতো। মেহেরপুরের প্রায় প্রতিটা এলাকার সড়কের দু'পাশে দেখা গেছে শুধু কলাই আর কলাইয়ের ক্ষেত। বীজ বপন ও গাছ বেড়ে ওঠার পর বৃষ্টিতে ডুবে যায় অধিকাংশ কলাইয়ের ক্ষেত। পরবর্তীতে বৃষ্টির পানি নেমে ও শুকিয়ে গেলে চাষীদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে। কারণ বৃষ্টির পানি নেমে যাওয়ার পরপরই কলাইয়ের গাছ বেড়ে উঠতে শুরু করে। তবে কিছু কিছু নিচু এলাকায় কলাই ক্ষেতের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। মাঠের অধিকাংশ কলাই ক্ষেতে এখন ফুল ও ফল লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা দেখে মন জুড়িয়ে যাচ্ছে কৃষকের। এবছর ভাইরাসে আক্রান্ত না হলেও কলাই ক্ষেতে পোকামাকড়ের আনাগোনা দেখা যায়। যা দমনে এখন অবধি কীটনাশক স্প্রে চলমান রয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর), সকাল থেকে বিকেল অবধি জেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে গিয়ে বিঘার পর বিঘা কলাইয়ের চাষ চোখে মেলে।
করমদী গ্রামের কলাইচাষী টিক্কা জানান, আমার ৩ বিঘা কলাইয়ের আবাদ রয়েছে। ফসল ভালো থাকলেও এখন পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। পোকার আক্রমণ রোধকল্পে কীটনাশক প্রয়োগের চিন্তা ভাবনা নিচ্ছি।
একই গ্রামের মাসুদ রানা জানান, মাঠে এবার পর্যাপ্ত পরিমাণে কলাই রয়েছে। উপর বৃষ্টির কারণে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখন অনেক ভালো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে।
নওপাড়া গ্রামের নয়ন জানান, আমি এবার ১ বিঘা জমিতে কলাইয়ের আবাদ করেছি, রোপণের শুরু থেকে গাছগুলো বেশ ভালো ভাবেই বেড়ে উঠছিলো, তবে নিচু জমি হওয়ায় টানা বৃষ্টিতে জমির অধিকাংশ কলাই পচে গেছে, তাছাড়া অন্যবারের তুলনায় মাঠের অন্যান্য কৃষকদের কলাই এবার খুব ভালো হয়েছে বলে তিনি জানান।
জুগিন্দা গ্রামের আরফুজ ইসলাম জানান, আমার ১ বিঘা জমিতে কলাইয়ের আবাদ করতে খরচ হয়েছে মোট ২ হাজার টাকা। কলাই চাষে খরচ কম। রোগবালাই না থাকলে ফলনও ভালো হয়ে থাকে। এবারও ফলন ভালো হয়েছে। তিনি ১ বিঘা জমির কলাই ক্ষেত থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকার কলাই বিক্রি করবেন বলে আশাবাদী।
একই গ্রামের বিদ্যুৎ জানান, প্রতি বিঘা জমির কলাই চাষে খরচ হয়েছে প্রায় দেড় হাজার টাকা। বৃষ্টি পরবর্তী পোকার আক্রমণে ভলিউম কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন। বিঘা প্রতি জমিতে ৬/৭ মণ কলাই উৎপাদিত হবে বলে তিনি মনে করেন। যা থেকে প্রায় ৩০/৪০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
কৃষি বিভাগ থেকে কোন সাহায্য সহযোগিতা কিংবা পরামর্শ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনরকম সাহায্য সহযোগিতা কিংবা পরামর্শ পাননি বলে জানান।
তবে নাম প্রকাশে একাধিক চাষীর অভিযোগ কৃষি বিভাগ থেকে নাকি বীজ ও সার প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত চাষীরা তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বিগত বছরগুলোর থেকে এবার অধিক পরিমাণ জমিতে কলাই চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনূকূলে থাকায় কৃষকরা তাদের আশানুরূপ ফলন পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন : :